বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
ভুট্টা |
সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ভুট্টা অনেক
জনপ্রিয় একটি শস্য বা খাদ্য। এর ইংরেজী নাম Corn। আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন
দেশের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভুট্টা। ভুট্টা শুধুমাত্র বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয়
ক্যালোরিই সরবরাহ করেনা বরং ভিটামিন এ, বি, ই এবং অনেক প্রকার খনিজ
ও সরবরাহ করে। উচ্চমাত্রার ফাইবার বা আঁশ রয়েছে এই ভুট্টায়। ভুট্টা পরিপাকতন্ত্রের
বিভিন্ন সমস্যা থেকে সুরক্ষা করে। যেমন- অর্শরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য ও কোলোরেক্টাল
ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভুট্টায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
অ্যান্টিকারসিনোজেনিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং আলঝেইমার্স রোগ প্রতিরোধ করে।
মানসম্মত পুষ্টিকর উপাদানের উপস্থিতির জন্য ভুট্টার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক।
খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি ভুট্টা ফাইটোকেমিক্যালে সমৃদ্ধ। আজ আমরা এই
ভুট্টার কিছু ঔষধী গুণাগুণ সম্পর্কে জানব।
ভুট্টার পুষ্টিগুণগুলোঃ
কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে ভুট্টাঃ
ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
সি, ক্যারোটিনয়েড ও
বায়োফ্লাভোনয়েডস রয়েছে। যা আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং কোলেস্টেরল
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। জার্নাল অফ
নিউট্রিশনাল বায়োক্যামিস্ট্রির মতে, ভুট্টার তুষের তেল গ্রহণ
করলে প্লাজমার এলডিএল কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমে শরীরে কোলেস্টেরলের শোষণ কমানোর
মাধ্যমে।
অ্যামোনিয়া প্রতিরোধ করেঃ
ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন
রয়েছে। ফলে ভুট্টা খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তস্বল্পতা বা অ্যানেমিয়া
প্রতিরোধ করে।
পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারীতা বৃদ্ধি
করেঃ
ভুট্টায় রিয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ফাইবার বা আঁশ। যা আমাদের খাবার হজমে সহায়তা করে। আমাদের পরিপাকতন্ত্রের
কার্যকারীতা বৃদ্ধি পায়। এতে কলন ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ
ভুট্টায় রয়েছে ফেনল। এই ফেনল আমাদের শরীরের
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই নিয়মিত ভুট্টা খেতে হবে।
গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য উপকারিতায়ঃ
ভুট্টায় রয়েছে প্রচুর ফলিক এসিড।
এই ফলিক এসিড। এই ফলিক এসিড গর্ভস্থ্য শিশুর সুস্বাস্থ্যের নিশ্চিয়তা দেয়। গর্ভবতী
মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ
ভুট্টায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে।
তাই ভুট্টা খাওয়ার ফলেমক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেল এর আক্রমণ রোধ করে
এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে ভুট্টাঃ
ভুট্টায় গ্লিসামিক ইনডেক্স খুবই কম
বলে ডায়াবেটিস মেলাইটিসের জন্য উপকারি। নিয়মিত বেশী করে ভুট্টা খেলে আমরা
ডায়বেটিসের ঝুঁকি মুক্ত থাকব।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ
ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ
এর রয়েছে। নিয়মিত ভুট্টা খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সেই সাথে চোখের
অন্যান্য সমস্যাও দূর করে।
হাড় ও কিডনীর যত্নে ভুট্টাঃ
ভুট্টার শাঁসে প্রচুর পরিমাণে খনিজ
উপাদান রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও কপার থাকে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসফরাস থাকে যা স্বাস্থ্যকর হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয়। এই খনিজ
উপাদানটি শুধুমাত্র হাড়ের ফাটল রোধ করেনা সেই সাথে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা
বৃদ্ধি করে।
ত্বকের যত্নে ভুট্টাঃ
ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের খুব ভাল যত্ন
নেয় এবং বিভিন্ন রকম চুলকানির হাত থেকে আমাদের ত্বককে সুরক্ষা করে।
সাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন
ভুট্টা |
বিঃদ্রঃ প্রতি ১০০ গ্রাম ভুট্টাতে রয়েছে ২৬
কিলোক্যালরি, ১৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১
গ্রাম ফ্যাট, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১.৬ গ্রাম ফাইবার বা আঁশ। তাই আপনার খাদ্য তালিকায়
ভুট্টার স্থানটা আপনিই নির্ধারন করুণ।
No comments:
Post a Comment