বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আমরা এশিয়া উপমহাদেশের মানুষ খুব রসনা বিলাসি।
আমরা খাবারের তালিকায় বিভিন্ন রকমের পদ পছন্দ করি। পরিমাণে একটু কম হলেও পদের যেন
কোন কমতি না যেন থাকে। সালাদ ছাড়া আমরা
অনেকেই খেতে চাই না আর এই সালাদে একটি সবজি ব্যাবহার করা হয় সেটি হল টমেটো। টমেটো
শুধু সালাদেই নয় বিভিন্ন রকমে একে তরকারি হিসেবেও ব্যাবহার করা হয়। টমেটোর সস বা
আচার আমাদের খুব পছন্দ। রেস্টুরেন্টে গেলে আমাদের খাবারের সাথে টমেটোর সস না থাকলে
মনে হয় খাবারটা যেন সম্পুর্নই হল না। এই টমেটোর রয়েছে বেশ কিছু ঔষধী গুণাগুণ। আজ
আমরা টোমেটোর ঐসব গুণাগুণ সম্পর্কে আলোচনা করব।
টমেটো কাঁচা বা রান্না করে দুই ভাবেই খাওয়া
যায়। টমেটো গরম করলে এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। তেলে ভাজলে এই টমেটো কলা, নাসপাতি,
আপেল ইত্যাদির চেয়ে দীগুণ বেড়ে যায়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়াম, আমিষ, ভিটামিন এ, সি ও ডি। টমেটো
আমাদের দেশের অনেকে বিলাতী বেগুন নামেও চিনে থেকেন। এটি একটি শীতকালীন সবজি হলেও
গ্রীষ্মকালেও এই টমেটো চাষ করা যায়।
টমেটোর গুরুত্বপুর্ণ টি উপকারিতাঃ
ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটোঃ
বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত প্রতিদিন
১-২ টি টমেটো খেলে ক্যান্সারের ঝূঁকি কমে যায়। টমেটোতে লাইকোপিন নামক এক বিশেষ
উপাদান রয়েছে। যার ফলে আমরা পাকস্থলী, ফুসফুস, অগ্নাশয়, স্তন, কোলন, প্রোস্টেট,
মূত্রাশয় ইত্যাদির ক্যান্সার হতে সুরক্ষা পাই।
চর্মরোগে টোমেটোঃ
যাদের চর্মরোগের সমস্যা আছে তারা
টমেটোর রস চর্মরোগে আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত প্রতিদিন ২/৩ বার লাগালে উপকার পাবেন।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে টোমেটোঃ
যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ টি টমেটো খেতে পারেন। আশা করি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
আসবে। স্বাদ বাড়ানোর জন্য অল্প পরিমাণে চিনিও মিশিতে পারেন।
বয়সের ছাপ ধরে রাখতে টমেটোঃ
তরতাজা একটা টমেটো টুকরা করে কেটে
রস করে অল্প চিনি মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এভাবে নিয়মিত ব্যাবহার করার ফলে আপনার
ত্বক কোমল ও মসৃণ হবে এবং বয়সের ছাপ পড়বে না।
রক্ত স্বল্পতায় টমেটোঃ
যাদের রক্ত স্বল্পতা রয়েছে তাদের
জন্য টমেটো একটি বেশ কার্যকরী সবজি বা ফল। একটি টমেটো, ১৫-২০ গ্রাম তিল এবং একটি
আপেল প্রতিদিন সকালে ও রাতে খেতে পারেন। এতে রক্ত স্বল্পতা দ্রুত সেরে যাবে।
মুখের আলসারের চিকিৎসায় টমেটোঃ
যাদের মুখ গহ্ববরে মাঝে মাঝে ঘা হয়
এখন থেকে তাদের আর কোন টেনশন নাই। টমেটোর রস এই ঘা সারাতে ব্যাপক কার্যকরী।
প্রতিদিন সকাল-বিকাল একটি করে টমেটো বা টমেটোর রস পান করুন। আশা করি ১০-১৫ দিনের
মধ্যে ঘা সেরে যাবে।
হেপাটাইটিস ভাইরাস সারাতে টমেটোঃ
যাদের হেপাটাইটিসের সমস্যা রয়েছে তারা
সকালে ও রাতে নিয়মিত ১ মাস টমেটো খেতে পারলে হেপাটিটিস নিয়ন্ত্রণে এসে যায়।
ঠান্ডা-সর্দি সারাতে টমেটোঃ
টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ১০০% কার্যকরী। এই
টোমেটো খাওার ফলে ঠান্ডা-সর্দি থেকে মুক্ত থাকা যায়।
জ্বর হলে টমেটোঃ
নানা কারনে আমাদের শরীরের
তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেড়ে গেলেই আমরা একে
জ্বর হিসেবে ধরে নিই। আসলে ইনফেকশনের ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। এসময়
অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। এক্ষেত্রে টমেটো খেলে বিশাল এক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে
কাজ করে। তবে টমেটোর সাথে একটু তরমুজের রস মিশিয়ে একটু পর পর পান করুন। ১ দিনের
মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মাড়ির রক্ত ক্ষরন রোধে টমেটোঃ
যাদের মাড়িতে রক্তপাত বা রক্ত
ক্ষরন হয় তারা বুঝে নিবেন ভিটামিন সি এর অভাবে এ সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা ইতিমধ্যেই
জেনে গেছি যে টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। নিয়মিত টমেটো খেলে মাড়ির
যেকোন ধরনের সমস্যা দূর হয়। তবে সমস্যা বড় আকার ধারন করলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের
পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
সুস্থ্য থাকার জন্য আরো জানতে
এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্যঃ টমেটো বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় খাবার। আসুন আমরা
উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি যুক্ত টমেটো খাই আমাদের শরীর সুস্থ্য রাখি।
No comments:
Post a Comment