name="description "content="this site is about herbal health"/> name="keyword "content="herbal health, herbal medicine, bangla health tips, unani medicine, ayurbadic"/> NATURAL HEALTH TIPS: চিরতার রয়েছে অনেক গুলি ঔষধি গুনাগুন।

Wednesday, December 28, 2016

চিরতার রয়েছে অনেক গুলি ঔষধি গুনাগুন।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
 
চিরতা 

প্রাচীনকাল থেকে মানুষ বন-জঙ্গলের উপর নির্ভর করে আসছে। কালের বিবর্তনে মানুষ গাছ-পালা থেকে সরে আসছে। বহুকাল আগে থেকে চিরতা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার কাজে ব্যাবহৃত হচ্ছে। চিরতা এমন একটি ঔষধী গাছ যার উপকারিতা অনেক। নিম্নে চিরতার কিছু গুণাবলী ও উপকারিতা নিম্নে উল্লেখ করা হল।


চিরতার ঔষধি গুণাগুণঃ

পেটের সমস্যা সমাধান করেঃ
ডায়রিয়া,পেটফাঁপা, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানে চিরতা খুব ভাল কাজ করে। চিরতায় বিদ্যমান আমারোসউইন পেটের যেকোন সমস্যা সমাধান করে।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ
রক্তের গ্লুকোজ কমায়। তাই নিয়মিত চিরতার রস পান করলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।

কালাজ্বর প্রতিরোধ করেঃ
কালাজ্বর এমন একটি রোগ ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এটি মারাত্বক রুপ ধারন করে। চিরতায় চিরানটিন রয়েছে যা মানবদেহে কালাজ্বরের জীবাণু প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এমতাবস্থায় প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস চিরতার রস পান করলে কালাজ্বরের সমস্যা দুর হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমাতা বৃদ্ধি করেঃ

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন তিতা খান তাদের অসুখ-বিসুখ কম হয়। যেকোন কাটা-ছিড়া,  ঘা তাড়াতাড়ি শুকায়।

এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করেঃ
ফাঙ্গাস জনিত সকল রোগের বিরুদ্ধে খুব ভাল কাজ করে এই চিরতা। পায়ের নখে ফাঙ্গাস জনিত কোন সমস্যা হলে চিরতার পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে এ সমস্যা দূর হয়। প্রতিদিন চিরতার রস পান করলে তা শরীরে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে।

এলার্জি দমনে কাজ করেঃ
এলার্জি জনিত সমস্যা যাদের আছে তারা নিয়মিত চিরতার রস পান করলে এলার্জি ভাল হয়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাত্রে ৪-৫ গ্রাম চিরতার ডাল ১ পোয়া গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ভাল করে ছেকে খালি পেটে পান করতে হবে।

রক্তপিত্ত জনিত সমস্যাঃ
রক্তপিত্ত জনিত সমস্যায় ৪-৫ গ্রাম চিরতা ১ পোয়া ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ২ বার পান করতে হবে।

ইনিফুল্যেঞ্জা হলেঃ
৮-১০ গ্রাম চিরতা আধা কেজি পানিতে সিদ্ধ করে পানি অর্ধেক হলে নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর ভাল করে ছেকে সকালে ও বিকালে ২ বারে পান করলে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাল হয়ে যাবে।

গর্ভাবস্থায় বমি হলেঃ
সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে সকল নারীদেরই বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে এক্ষেত্রে ১ গ্লাস চিরতার গুড়া পানিতে মিশিয়ে পান করলে বমি কমে যাবে।

নব্যপ্রসূতির স্তন শোধনে সহায়তা করেঃ
বাচ্চা প্রসব করেছেন এমন মহিলাদের শরীরে জ্বর জ্বর ভাব হলে,  জড়তা ও গ্যাস জনিত সমস্যা হলে এই মায়ের বুকের দুধ পান করলে সন্তানের বমি,  পেটফাঁপা, পায়খানার রং পরিবর্তন হয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় ৪-৫ গ্রাম চিরতা ১ পোয়া ঠান্ডা পানিতে ২-৩ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তা পান করলে এ ধরনের সমস্যা দূর হবে।

হাঁপানী বা শ্বাসকস্টঃ
যাদের হাঁপানী জনিত সমস্যা আছে এবং পায়ুপথে রক্ত পড়ে তাদের চিরতার গুড়া মধুর সাথে মিশিয়ে ২-৩ বার চেটে খেতে হবে।

প্রচন্ড বমি হলেঃ
প্রচন্ড বমি হলে তাদের ক্ষেত্রে ২ কাপ হালকা গরম পানিতে ৪-৫ গ্রাম চিরতার গুড়া ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২/১ ঘন্টা পর তা পান করতে হবে। এতে বমি কমে যাবে।

কৃমি হলেঃ
কৃমি জনিত সমস্যা সাধারণত ছোট বাচ্চাদের বেশী হয়। ১-২ পোয়া চিরতা একটু মধু অথবা চিনি মিশিয়ে খেলে কৃমি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পেটে ব্যাথা থাকলে সেরে যাবে।

চুলকানি বা খোস পাঁচড়া হলেঃ
২০ গ্রাম চিরতা অল্প পানিতে মিশিয়ে ছেকে সরিষার তেল দিয়ে ভেজে নিতে হবে। তারপর অল্প অল্প করে চুলকানিতে লাগিয়ে দিতে হবে। এতে যেকোন ধরনের চুলকানি ভাল হয়ে যাবে।

চুল পড়া রোধেঃ
অল্প বয়সে চুল পড়ে গেলে কার ভাল লাগে বলেন! এক্ষেত্রে ২-৩ গ্রাম চিরতা আধা পোয়া পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই পানি ভাল করে ছেকে মাথায় ভাল করে লাগাতে হবে। এভাবে ১ দিন পর পর ১ সপ্তাহ লাগাতে হবে।

পঁচা ঘা হলেঃ
এমন কিছু পঁচা ঘা রয়েছে যেগুলো খুব সহজে সেরে উঠতে চায় না। এক্ষেত্রে ৮-১০ গ্রাম চিরতা আধা পোয়া কুসুম গরম পানিতে সে ঘা ২-৩ দিন ধুলে ঘা ভাল হয়ে যাবে।


ইউনানী চিকিৎসায় হৃদপিন্ড ও যকৃতের বলকারক,  জ্বর হলে উপকার করে ও চোখের জ্যোতি বাড়াতেও চিরতা খুব ভাল কাজ করে।


চিরতায় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যেমনঃ- এমারোজেন্টি গ্লোকোসাইড,  অফেলিক আসিড,  চিরাটিন যা চিরতায় তিতা স্বাদ আনে। এছাড়া এলকালয়েড ও ট্রাইতারপিনওয়েড এবং বিভিন্ন রকমের জ্যান্থোন্স,  স্টেরল, লিগনেন ইত্যাদি রয়েছে।


চিরতা সম্পর্কে রাসূল(সাঃ) এর উক্তি রয়েছেঃ- একদা রাসূল(সাঃ) এঁর মহিয়সী বিবিগনের মধ্যে কোন একজনের আঙ্গুলে ফোঁড়া হয়। তাঁর বর্নণা মতে রাসূল(সাঃ) আমাকে জিজ্ঞাস করলেন,  তোমার কাছে কি যারিয়াহ(চিরতা)আছে? আমি বললাম জি হ্যা আছে। রাসূল(সাঃ) এরশাদ করলেনঃ- ফোঁড়ার উপর যারিয়াহ লাগিয়ে দাও এবং এই দোয়া পাঠ কর।

এছাড়াও চিরতার আরো বিভিন্ন কার্যকারিতা আছে। যেমনঃ- লেশমেনিয়াসিস প্রতিরোধে,  শোথে,  কৃমিনাশকতায়,  জ্বর নিরাময়ে,  ম্যালেরিয়া হলে,  যক্ষা হলে, স্নায়ুর কার্য নিয়ন্ত্রনে,  যকৃত রক্ষা করতে,  কোমলতা আনে,  রেচনে,  উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করে,  ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রনে,  পেটের ব্যাথায়,  টনিক হিসেবে,  রক্ত পরিস্কারেহৃদপিন্ড সচল রাখতে ইত্যাদি আরো অনেক কার্যকারিতা আছে এই চিরতার।

সাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন 
 
চিরতা 


বিঃদ্রঃ গর্ভবতী অবস্থায় চিরতার রস পান করবেন না। যাদের আলসার আছে তারা চিরতার রস পান করবেন না এবং একটানা পান করা যাবে না। কিছু দিন অন্তর অন্তর পান করাই উত্তম।

No comments:

Post a Comment