বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
পৃথিবিতে যত রকম খাবার উপযোগী ডিম রয়েছে এর মধ্যে কোয়েল পাখির ডিম শ্রেষ্ঠ। আমাদের দেশে ব্রয়লার মুরগীর ডিমসবচেয়ে বেশী চলে। আমরা আসল ডিম খুঁজেই পাই না। এই ডিমগুলো থেকে বাচ্চা হয় না। এগুলো হাইব্রিড পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হয় শুধু মানুষের খাদ্য যোগাড় করার জন্য। এগুলোতে কোন পুষ্টি বা উপকারিতা নেই। বয়স চল্লিশোর্ধ হলেই ডাক্তাররা তাদের রোগীদের মুরগীর ডিম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে থাকেন। কারন এই মুরগীর ডিম খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে আমাদের হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষেত্রে কোন বাধা দেওয়া হয় না। কোয়েলের ডিমের কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই বরং কোয়েলের ডিম নিয়মিত খেলে বড় ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকার সম্ভাবনা থাকে।
একজন ফ্রেঞ্চ ডাক্তার জিন ক্লড বিভিন্ন রোগীদের উপর পরীক্ষা করে দেখেছেন কোয়েল পাখির ডিম নিয়মিত খেলে শরীরে ঔষধ হিসেবে কাজ করে, হার্টের সমস্যা, কিডনীর সমস্যা, অতিরিক্ত ওজন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, মেধার বিকাশে, রক্তশূন্যতায়, ডায়বেটিস ও যৌন সমস্যায় খুব ভাল কাজ করে এই কোয়েলের ডিম।
মুরগীর ডিমের সাথে কোয়েলের ডিমের তুলনা করে দেখুনঃ
কোয়েলের ডিমে ভিটামিন বি১ রয়েছে। যায় পরিমাণ মুরগীর ডিমের ৬ গুণ, ফসফরাস ৫ গুণ, আয়রন ৫ গুণ, ভিটামিন বি২ ১৫ গুণ, এলার্জি প্রতিরোধক ও অ্যান্টিবডি উৎপাদক। শরীরের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, এমাইনো এসিড ইত্যাদি রয়েছে কোয়েলের ডিমে। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় ১ হালি কোয়েলের ডিম খেলে শরীরের কলকব্জা খুব ভাল কাজ করে। হার্টের সমস্যায় কোয়েলের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিডনী ও লিভারের সমস্যায় কোয়েলের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। হজম শক্তি বাড়াতে ও গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কোয়েলের ডিম খুব উপকারি। মেধা বিকাশে কোয়েলের ডিম ব্যাপক ভুমিকা রাখে। সব বয়সের মানুষের শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে শরীরকে চাঙা করতে নিয়মিত কোয়েলের ডিম খেতে পারেন।
কোয়েলের ডিম ঔষধ হিসবে খাওয়ার নিয়ম জেনে নিনঃ
রোগের অবস্থা, বিপদজনক ও রোগীর গুরুতর অবস্থা বিবেচনা করে কত দিনে কতগুলি ডিম খাওয়া যাবে তার বর্ণনাঃ
১. ১-৭ বৎসর পর্যন্ত বয়সের ক্ষেত্রে দিনে ২/৩ টা করে কোয়েলের ডিম ২০/৩০ দিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
২. ৮-১০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৩ টা করে কোয়েলের ডিম নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩. ১১-১৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৩ টা করে ১ মাস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৪. ১৬-১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ২৬ দিনে ১২০ টা ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
৫. প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৪৯ দিনে ২৪৯ টা কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
রোগের উপর ভিত্তি করে কোয়েল পাখির ডিমের খাদ্য পুষ্টি উপাদানঃ
চর্মরোগের ক্ষেত্রে ১২০ টি
লিভারের সমস্যায় ২৪০ টি
ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে ২৪০ টা
হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য ১২০ টা
বাঁত রোগের জন্য ২৪০ টা
অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ২৪০ টা
হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ২৪০ টা
এইডস রোগের ক্ষেত্রে ২৪০ টা
এজমা রোগের জন্য ২৪০ টা
এক্সিমার সমস্যায় ২৪০ টা ও
রক্তশুন্যতায় ২৪০ টা কোয়েলের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশিষ্ট ডাক্তাররা।
No comments:
Post a Comment