বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
আমরা
এশিয়া উপমহাদেশের মানুষ খুব রসনা বিলাসী। আমরা
মশলা খুব ভালবাসি। আমাদের মহাদেশে মশলার বাণিজ্য শুরু করেছিল লিওনার্দো
দ্যা ভিঞ্চি নামক এক বণিক। আমরা প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মশলা
খেয়ে থাকি। এমনই এক মশলার নাম পিঁয়াজ। পিঁয়াজ কে না চেনেন? পিঁয়াজের রং লাল বর্নের হয়। পিঁয়াজ শুধু মশলা
হিসেবেই ব্যাবহার হয় না এর অনেক ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। নিম্নে পিঁয়াজের কিছু ঔষধি
গুণাগুণ নিয়ে আলোচনা করা হল।
পিঁয়াজের উপকারিতা নিম্নরুপঃ
পিঁয়াজ
আমাদের দেশের একটি মশলা জাতীয় ফসল। চকিৎসা শাস্ত্রে পিঁয়াজের ব্যাবহার সেই
প্রাচীনকাল থেকেই ধারাবাহিক ভাবে হয়ে আসছে। প্রাচিনকালে প্লেগ ও কলেরা রোগের
চিকিৎসায় এই পিঁয়াজ ব্যাবহার করা হত। এ ফসল বছরের প্রায় সকল সময়ই হয়ে থাকে। পিয়াজে
এক ধরনের তেল থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের সালফার যৌগ থাকে। যেমনঃ- ডাই সালফেট, ট্রাই
সালফেট, টেট্রাসালফাইড থায়োল ও থায়োফেন ডেরিভেটিভস। পিঁয়াজের মদ্ধে ঝাঁজ থাকে আর
এই ঝাঁজ উৎপাদনকারি উপাদান হল অ্যালাইল প্রোপাইল ডাইসালফাইড। পিয়াজে আরো আছে
প্রোটিন, অ্যামাইনো এসিড, পলিফেনল,
কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, স্টেরল, বিটা-অ্যামিন, স্যাপোনিন,
ক্যাচেটল, ফলিক এসিড, ফেনলিক এসিড, হজম কারী আঁশ ও প্রোটোক্যাটেচুয়েড এসিড
ইত্যাদি। একটি সঠিক আকারের পিয়াজে রয়েছে ৮৬.৮% পানি, ১১.৬% শর্করা, ১.২% প্রোটিন, ০.০৪%
ফসফরাস, ০.১৮% ক্যালসিয়াম এবং ০.৭% আয়রন। বিশিষ্ট কয়েকজন কার্ডিওলজিস্ট তাদের
রোগীদের প্রতিদিন ১ টি করে পিঁয়াজ খাওার পরামর্শ দেন। পিঁয়াজের কোন
পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। অতিরিক্ত পরিমাণে পিঁয়াজ খেলে কোন সমস্যা নেই। নিয়মিত
প্রতিদিন ২/১ টি কাঁচা পিঁয়াজ খেলে নিম্নলিখিত উপকারগুলী পাওয়া যায়।
পিঁয়াজের গুরুত্বপুর্ণ উপকারিতাঃ
ক্যান্সার প্রতিরোধে পিয়াজঃ
পিঁয়াজে
বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানবদেহের কোষের ডিএনএ কে মারাত্বক ক্ষতির হাত থেকে
রক্ষা করে। এতে মলদ্বার, ব্রেষ্ট, লান্স টিউমার ও জরায়ু ক্যান্সার এর হাত থেকে
রক্ষা পাওয়া যায়।
ডায়বটিস নিয়ন্ত্রণে পিয়াজঃ
পিঁয়াজে
বিদ্যমান এলাইল প্রোপাইল ডাই সালফাইড যা মানবদেহে ইনসুলিনের মত কাজ করে। রক্তে
চিনির পরিমাণ ঠিক রাখে ফলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এক্ষেত্রে একজন ডায়বেটিস
রোগী নিয়মিত প্রতিদিন ৫০ গ্রাম পিঁয়াজ খেলে ইনসুলিনের মাত্রা অর্ধেকে নিয়ে আসা
যায়।
ঠান্ডা-কাঁশিতে পিঁয়াজঃ
ঠান্ডা-কাঁশিতে
পিঁয়াজ খেলে ঠান্ডা-কাশি ভাল হয়ে যায়। যাদের নাক বন্ধ হয়ে যায়। তারা কাঁচা পিঁয়াজ
খেলে নাক পরিষ্কার হয়ে যাবে। এছাড়া এজমা ও ব্রঙ্কাইটিসেও পিঁয়াজের কার্যকারিতা
পাওয়া যায়।
নাক দিয়ে রক্ত পড়লে পিঁয়াজঃ
নাক
দিয়ে রক্ত পড়লে ৪/৫ ফোটা পিঁয়াজের রস নাকে দিলে তৎক্ষণাৎ রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
বিষ ফোঁড়ায় পিয়াজঃ
বিষ
ফোঁড়া হলে খুব ব্যাথা করে। ঠিক মত কাজ করা যায় না। এ সমস্যা যাদের হয় শুধু তারাই
টের পান। পিঁয়াজের রস ফোঁড়ায় লাগালে ব্যাথা সেরে যাবে।
বাতের ব্যাথায় পিঁয়াজঃ
যাদের
বাতের ব্যাথা আছে তারা নিয়মিত পিঁয়াজ খেতে পারেন খুব ভাল উপকার পাবেন।
রক্তের ঘনত্ব বজায় রাখেঃ
পিঁয়াজে
বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তের ঘনত্ব বজায় রাখে। রক্ত জমাট বাঁধা থেকে
সুরক্ষা দেয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পিঁয়াজঃ
নিয়মিত
প্রতিদিন পিঁয়াজ খাওায় ধমনীতে ময়লা জমতে দেয় না। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হৃদযন্ত্র সতেজ রাখতে পিঁয়াজঃ
পিঁয়াজ
রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হৃদযন্ত্র সতেজ থাকে হার্ট এটাক হয় না ও
হৃদযন্ত্রের যেকোন সমস্যা থেকে বাঁচা যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
নিয়মিত
প্রতিদিন কাঁচা পিঁয়াজ খেলে মানবদেহের রোগ প্রতরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
চুলকানি ও এলার্জি জাতীয় সমস্যায় পিঁয়াজঃ
নিয়মিত
প্রতিদিন কাঁচা পিয়াজ খেলে শরীরে চুলকানি ও এলার্জি হয় না।
ডায়রিয়া ও আমাশয় কমাতে পিঁয়াজঃ
ডায়রিয়া
ও আমাশয় হলে কাঁচা পিয়াজ খেতে পারেন। খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে যাবেন।
গ্যাস্ট্রিক ও আলসার থেকে সুরক্ষা দেয়ঃ
নিয়মিত
কাঁচা পিঁয়াজ খেলে গ্যাস্ট্রিক ও আলসার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
নিয়মিত
কাঁচা পিয়াজ খেলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। স্থায়ীত্ব বাড়ে।
মহিলাদের হাড়ের ঘনত্ব বাড়েঃ
নিয়মিত
প্রতিদিন কাঁচা পিয়াজ খেলে মহিলাদের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। হাড় শক্ত হয়।
সাস্থ্য সম্পর্কে আরও জানতে ক্লিক করুন এখানে
পিঁয়াজ |
মন্তব্যঃ
পিঁয়াজের এত উপকার থাকার পরেও একটি সমস্যা আছে সেটা হল কাঁচা পিয়াজ খেলে মুখে
দুর্গন্ধ হয়। তাই কাঁচা পিঁয়াজ খাওার পর মুখ ভাল করে পরিষ্কার করুন।
Nice.Thanks.
ReplyDelete